চান্দ্র
ক্যালেন্ডার, না কি সৌর ক্যালেন্ডার, সেই প্রশ্নে যাচ্ছি না। ওটা পণ্ডিতরা ভাববেন। নতুন বছরের শুভেচ্ছা ও
নমস্কার জানাই।
কবিতার
মধ্যে সততা চাই। কনটেন্ট হোক, বা টেকনিক, যা হবে সৎ হোক। সততা সরল হতে পারে, আবার জটিলও
হতে পারে। পশ্চিমবঙ্গের কবিতায় এই মুহূর্তে এই অনিবার্য সততার খুব অভাব। যাঁরা বিগ
পত্রিকা চালাচ্ছেন, কবিতা
উৎসব করছেন, অন্য
কবিদের ভাগ্য নির্ধারণ করছেন, তাঁদের মধ্যে এই সততা সম্ভব নয়। তাঁদের নিয়ন্ত্রণ করতে হয়
অনেক কিছু, অনেক
কিছুকেই সেন্সর করতে হয়,
ছাড়পত্র দিতে বা না-দিতে হয়। চেয়ার বজায় রাখতে হয়
নিতম্বের তলায়। এঁরাই তো সমাজকে চালাচ্ছেন, এঁরাই নিয়ম-কানুন
বানাচ্ছেন। এঁদের পক্ষে সৎ থাকা সম্ভবই নয়। এঁরা সবাই মৃত কবি। একেকজন সামাজিকভাবে
সফল লোক। এঁরা কেউকেটা হতে চেয়েছেন, হতেও পেরেছেন। অশিক্ষিত সমাজে
প্রতিষ্ঠার লোভ এঁদের মেরে ফেলেছে। এখানে ব্যর্থতার সার্বিক বোধ ছাড়া একজন কবির
পক্ষে সততার দিকে যাওয়া সম্ভব নয়। নিজের সব পাওয়া আর সাফল্যকে ডিসকার্ড করতে হবে।
একজন কবি একজন ভাঙাচোরা একলা হতাশ অপমানিত লোক, সে তিনি রবীন্দ্রনাথ হোন, বা
জীবনানন্দ।
দেখতে পাচ্ছি কলকাতার সব ‘নামকরা’ এবং ‘কলকে পাওয়া’ কবিদের মুখ।
কারো দাড়ি আছে। কারো দাড়ি নেই। এঁরা জানেন কবিতা লিখে লাভ নেই। এঁরা জানেন পাবলিক
কী খায়। এঁরা সেটাই পাবলিককে দ্যান। পাবলিক খায়। খুশি হয়। উত্তেজিত হয়। হল্লা করে।
এগুলোকে কবিতা ভেবে খুশি হয়, রেগেও যায়। এঁরা জানেন পাবলিকের
কবিতা সম্পর্কিত ধারণাটাকে কাজে লাগিয়েই কবি হিসেবে জীবনে উন্নতি করতে হয়, এবং পাবলিকের সেই ধারণাকে কোনোভাবে নড়াতে নেই। এঁরা
ফুটবলের কর্মকর্তাদের ভঙ্গিতে বাংলা কবিতাকে চালাতে চেয়েছেন, পেরেছেন।
অনুপম মুখোপাধ্যায়
পরিচালক : ‘বাক্’