চারটি কবিতা : অভিষেক ঘোষ
গরু মরলে, হাঁস আসে
ব্যস্ত হলেই এখন ঘুম পায়, আর খুব মনে
হয়,
আমার মত স্বপ্ন কোন মানুষ দেখছেনা
ভোরে
ঢোক গিললে সমস্ত জল পাথর কান্নায়,
আলো ফেলে বলেছিল,
জল তুই এবার গাছ হয়ে যা, তোর গায়ে
এবার,
শান্ত করে বসে থাক কুয়াশানির্মিত
গরম, ধোঁয়া শ্বাস।
তাকে উল্টে ফেলেছি বলেই তো, নেকড়ে
আসে না,
হলুদ মানুষের ক্যমেরালেন্সে, গণ্ডারের
শিং ধড়ে,
প্যাক প্যাক করে উড়ে যায় হাঁস।
যাকে কেউ দেখে না অতটাও অহংকারের
ভোরে,
সারারাত স্বপ্ননা দেখে, এখন স্বপ্ন
প্রবেশ পায়।
নশো নব্বই টি আঙুলের স্তব্ধতায়, যারা
বলছে,
এবার, এই একটি বার মদ্যন্ত বিছানাতুর
ভাবুকগ্রামে,
বেছে ওঠা পাক।
আমি তোমার বিশ্বাস কে আঘাত দিয়ে,
এগিয়ে যেতে চেয়েছি মনে হয় না,
আমি জানতাম। তোমার অবিশ্বাসেই, আঘাত
দিয়ে,
আমার বিশ্ব তৈরি হয়ে যাক।
সঞ্চালক হওয়া যার লক্ষ্য ছিল, তার এসব দরকার নেই
আবার সেই উঁচু উচু পাহাড় ধরে খাবো। সূর্যাস্তের
শেষ দেখতে দেখতে হারিয়ে যাবো, আকাশের ভিতর। সেখানে চলবে তারা, মহাতারা, তাদের মুখের কাছে মাইক নিয়ে যাবো। তারা বলবে, কাব্যি করবে, আমি তেরো বছর ধরে
শুনব। কিছুক্ষণও আর ভাবব না। রেডিও ছুঁড়ে নিজের মাথায় গান মারব, খবরের দুর্ঘটনা ছুঁড়ে মারব। আর বার বার
এক কথা বলতে বলতে ক্লান্ত লাগলে, একদিনও আর থামব না। একদিন থামলে আমি বুঝেছি, বোবা
নয়, বোকা নয়, ছাগল নয়, শুধু মানসিকতার ভিতর যে অহংকার থাকে সেটুকু হারায়। অহংকার
শব্দ টিকে বিনয়ী বানানো যায় না কোনদিন।
তবে বিনয় কথা টিকে অহংকার রূপে,
আরামসে ব্যবহার করে, এগিয়ে যাওয়া যায়, বহুদুর।
লেজে কালিপটকা বাঁধা কুকুরটির সাড়া পাড়া চেঁচিয়ে যেদিন
শান্ত হয়ে গেল
স্থবির কণ্ঠে যারা ছটফট ধ্বনি তোলে
তাদের দেখে আমি সব চেয়ে বেশি ভয় পাই।
আমি এখন কাঠবিড়ালি, রামধনু, ঝি ঝি
পোকা সবাইকে দেখে ভয় পাই,
তোমার হাসি দেখে ভয় পাই, তোমার রাগ
দেখে ভয় পাই, তোমার পত্রিকায়
নিজের নাম দেখে ভয় পাই, পুরস্কারের
গোপন লিস্টে নিজের নামের উপর,
পেন বুলানো দেখে সুড়সুড়ি লাগে গায়ে,
একটু চুলকে দেওয়ারও কেউ নেই বলে
নিজের আঙুল ব্যবহার করি।
এই আঙুল ব্যবহার করে খেঁচা থেকে লেখা
আর লেখা থেকে খেঁচার বাইরে
কোনদিন বেড়তে পারব বলে মনেই আনছি না
কিছু।
শুধু নিজেকে দেখে,
একসময় হাসি পেত, রাগ হত, ভয় হত এই
বুঝি মরে যাবো,
এখন দেখছি সেই সব মনে হওয়া মনে
হওয়াতেই থাকে,
আমরা মনে হওয়া নিয়ে বেঁচে থাকলেও, মরে
যাওয়ার পর যখন আবারও
বেঁচে থাকি, তা অন্যের মনে হওয়ার
উপরই।
তাই আমার মনে হওয়া দিয়ে পৃথিবীর যখন
কিছু এসে যায় না,
তাহলে কবিতার মনে হওয়া নিয়েও, সবসময়
এত এসে যেতে নেই।
সে টুকু কেটেও ইংলিশ চ্যনেল পার হওয়া যায়
অতএব শেষ থেকেই শুরু করে শুরু থেকে
শেষ করে মধ্য থেকে গগন করে পাতাল থেকে কুসুম করে এই যাবতীয় আমার এগিয়ে যাওয়া
লাইনের ধারে, আকাশের কোনদিনও কোন অবদান ছিল না, ছিল যেটুকু সেটুকু লুকিয়ে হাসির
খোরাকে, চন্দ্র কেতুর মোড়কে, শাল পাতার ভিড়ের নীচে তলিয়ে যেতে যেতে খাবি খাওয়ার
কথা কোথাও কোনদিন মনের সংস্পর্শএর অভাবে
উপভোগ করতে চাইলেও পারে নি কুমড়ো ভাতের মুখ করে শুয়ে পরা দিনে রাতে যা কিছু
আর ছুটিয়ে মারে না, ভাবিয়ে মারে না, চিবিয়ে মারে না বরং বহু আগেই মেরে ফেলে, অল্প
অল্প করে জাবর কাটায়, ভোরের স্বপ্নে...
as usual valo lekhoni..
ReplyDelete