।। বাক্‌ ১২২ ।। তাহিতি ফারজানা ।।






চারটি কবিতা - তাহিতি ফারজানা

 ভয়াল দুপুর

গলায় ঝুলানো লকেটে
বেজে যাচ্ছে ধ্রুপদী সময়
প্রগাঢ় ঠোঁটে আমি তুলে নিচ্ছি বিশ্বস্ত শিশির;
অবশিষ্ট পৃথিবীর ঘাম

নিখোঁজ হবার প্রবণতা জাগিয়ে তোলা দুপুর
আমাকে চেনেনা
আমি তাকে হাতকড়া পড়িয়েছি
কেননা, সে একদিন পাঁচ বছরের মেয়ের কাছ থেকে
পথ লুকিয়ে ফেলেছিল
তপ্ত আকাশ ঢেলে পুড়িয়েছিল
স্কুলগামী কৈশোরের পিঠ

আজও সে ব্যক্তিগত দুর্গে নিয়ে উস্কে দেয় ক্ষুধা
ঘুম সংযোগ করে শিরায়

প্রচণ্ড সব দুপুর আদতে চোরাবালি
অসাবধানতা বশত লালন করি


 শুশ্রূষা

লবনগন্ধী বাতাস
বয়ে আনে অপার শুশ্রূষা।
হাত থেকে খুলে রাখি সময়
চোখ থেকে অপরাহ্ন-
যেন অগোচরে না হয় পতন।

সন্দিহান মানচিত্রে কোথাও
স্পষ্টত ঝুলে থাকে সিগন্যাল
কাঁচপোকার ঠোঁটে দোল খায় বনাঞ্চল,
আর গোপন দুর্বলতা বাষ্পীভূত মেঘ হয়ে উড়ে
লুকোচুরির সংসারে

যতটা বিস্ময় জানে মরু ঢেউ
তারচেয়ে বিপুল ঢঙে
জারুল ফুলের কাছে বন্ধক রাখা আছে ব্যাধি

 অন্ধ আয়ু

ট্রেন হাতছাড়া হয় প্রত্যহ
সময় গিলে ফেলে ঘড়ি,
নয়তো বেচে দেয় কোন প্রয়াত বণিকের কাছে।

কেউ দিব্যি দেয়নি
বইতে হবে চৌচির উঠোনের শব!
এ কথা জানার পরও
রাত খুঁড়লে কেবল বধিরতা উঠে আসে।

জলের সমান্তরালে মূর্ছিত এ শহর
আয়ুর পাশে পড়ে নেই কোন সুঘ্রাণ
...............................

 অতঃপর

এভারেস্ট গেঁথে নেয় যাদের শরীর
তারা বরফের ভেতর সমাধিস্ত বরফ হয়ে
হাতছানি দেয় নতুন আরোহীদের।
এইতো ছোঁয়াচে ইতিহাস।

আঙুরের মতো থোকা থোকা কথা
ভরে রাখি ঈর্ষনীয় খামে।
কুড়িয়ে নিও অনুভূতির গভীরতম অঞ্চল।

পৃথিবীকে নিরাপদ জেনে
জন্মলগ্নে হো হো করে হেসে উঠুক শিশু।

No comments:

Post a Comment