দুটি কবিতা :
মাহবুব অনিন্দ্য ।।
মায়াপুস্তক
২৯ ও ৫৫ নং পৃষ্ঠায় কী আছে?
প্রথমটাতে আপেল, পরেরটাতেও আপেল।
৫৭ ও ৭২ নং পৃষ্ঠায় কী থাকতে পারে?
একটাতে আছে হরিণ, আরেকটাতে মায়া।
৪৩ ও ৭৭৪ নং পৃষ্ঠার অর্থ কী?
একটা কুমির আরেকটা তার ছায়া।
৭৯ ও ১৪ নং পৃষ্ঠা কী বলে?
একজন হনুমান-সরোবর, আরেকজন অস্থিরতা পুষে
মহাউন্মাদ হয়ে উঠতে চায়।
মহাউন্মাদ হয়ে উঠতে চায়।
৮৭ ও ৪১৩ নং পৃষ্ঠা সূর্যাস্ত দেখে কী বলল?
বলল 'পরবর্তীতে বিশেষজ্ঞ-মতামত পৌঁছে দেয়া
হবে।'
৩২ ও ৩৬ নং পৃষ্ঠার কোনো বক্তব্য আছে কি?
এরা জীবনকে বিশেষ কৌণিক অবস্থান থেকে দেখতে
চায় আর বলে, এ-ডালে বত্রিশ ও-ডালে ছত্রিশ।
চায় আর বলে, এ-ডালে বত্রিশ ও-ডালে ছত্রিশ।
৯৯ ও ৮৮ নং-এর কিছু হারিয়ে গেল?
না। বরং ওরাই তো পোস্টারে ছেয়ে ফেলেছে শহর,
'পকেট সাবধান' আর 'জনাব কিছু ফেলে গেলেন কি?'
দিয়ে।
'পকেট সাবধান' আর 'জনাব কিছু ফেলে গেলেন কি?'
দিয়ে।
তারপর ২৯ ও ৪৪ এর খবর বলো।
এরা সবকিছুতে মাস্টারি করে। এমনকি বটগাছকে
গিয়ে বলে, 'এত ছায়া নিয়ে বসে থেকে কী লাভ
তোমার? সেলুনে চুল কাটিয়ে এসো।'
গিয়ে বলে, 'এত ছায়া নিয়ে বসে থেকে কী লাভ
তোমার? সেলুনে চুল কাটিয়ে এসো।'
২২ ও ১১?
এরা ফোনবুথ থেকে নিজের বাড়িতে কল দিয়ে
যথাক্রমে ২২ ও ১১ কে চায়!
যথাক্রমে ২২ ও ১১ কে চায়!
৫৫ ও ৭৬ এর ভাগ্যে কী লেখা আছে শেষ পর্যন্ত?
০।
৯০ ও ৬৯-এর সাথে প্রথম দেখার স্মৃতি বর্ণনা করো।
ঐ দেখা-হওয়াটাই তো একটা অভিশাপ। ওরা কাউকে
স্মৃতি নিয়ে ফিরতে দেয় না। সব জবাই করে রেখে দেয়।
স্মৃতি নিয়ে ফিরতে দেয় না। সব জবাই করে রেখে দেয়।
৭৭ ও ৫০ কি এখন অনলাইন আছে?
একজন আলুক্ষেতে গা-ঢাকা দিয়েছে, আরেকজন
পগার পার হবার অপেক্ষায় আঙুলে দিন গুনে চলেছে।
পগার পার হবার অপেক্ষায় আঙুলে দিন গুনে চলেছে।
সাড়ে ৭৬ ও ঊন ৪৬-এর ভাগ্য কতটা খারাপ?
এদের সম্ভাবনা ঘোর উজ্জ্বলতর।
সোয়া সাত ও পৌনে চার কিছু বলল?
বলল তো, 'কোথাও কিছু মায়া থাকিয়া যায়'।
আর?
আর কিছু না।
মাৎস্যন্যায়
একটি আপেলগাছ আরেকটি আপেলগাছকে খেয়ে
ফেলতে চাইছে।
ফেলতে চাইছে।
এক ছায়ামূর্তি আরেক ছায়ামূর্তিকে বলছে, 'তমসা
ঘনাইছে'।
ঘনাইছে'।
এক কুমির আরেক কুমিরকে খেয়ে ফেলতে চাইছে।
এক পাইথন আরেক পাইথনকে খেয়ে ফেলতে চাইছে।
একটি কবিতা আরেকটি কবিতাকে বলছে, 'আজ
তোর
একদিন কি আমার'।
একদিন কি আমার'।
এক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আরেক রবীন্দ্রনাথকে বলছে,
'ক্ষমো মোরে, ক্ষমো'।
'ক্ষমো মোরে, ক্ষমো'।
এক বিশ্বমিথ্যাবাদী আর এক বিশ্বমিথ্যাবাদীকে বলছে,
'জীবনের ধন কিছুই যায় না ফেলা'।
'জীবনের ধন কিছুই যায় না ফেলা'।
একটি কূট-প্রশ্ন আরেকটি কূট-প্রশ্নকে জিজ্ঞাসা করে,
'অধিবিদ্যা কী প্রকারের বস্তু?'
'অধিবিদ্যা কী প্রকারের বস্তু?'
একটি পাথরখণ্ড আরেকটি পাথরখণ্ডের উদ্দেশ্যে
লিখেছে, 'সহে না যাতনা'।
লিখেছে, 'সহে না যাতনা'।
এক খ্রিস্টপূর্ব তার খ্রিস্টাব্দকে জানিয়েছে,
'মানুষের অধিক মাধুরী আর নাই'।
'মানুষের অধিক মাধুরী আর নাই'।
এক মুরাকামি আর এক মুরাকামিকে স্বপ্নে দেখছে,
আহা।
আহা।
একটি আঙুরগাছ আরেকটি আঙুরগাছকে চিবিয়ে
খেতে-খেতে অনুভব করছে 'আঙুরফল টক', কিন্তু মুখ
ফুটে কথাটি বের করতে পারছে না।
খেতে-খেতে অনুভব করছে 'আঙুরফল টক', কিন্তু মুখ
ফুটে কথাটি বের করতে পারছে না।
একটি বকুলফুল আরেকটি বকুলফুলকে প্রশ্ন করে,
'মানুষের গানের ভাষা বোঝ?'
'মানুষের গানের ভাষা বোঝ?'
একটি গতকাল আরেকটি গতকালকে হুঙ্কার ছাড়ছে,
'দেখে নেব', 'ভালো হবে না' ইত্যাদি।
'দেখে নেব', 'ভালো হবে না' ইত্যাদি।
এক মামুন হুসাইন আরেক মামুন হুসাইনকে বলছে,
'নিঃসঙ্গতার প্রকারভেদ দৃষ্টান্তসহ আলোচনা করো'।
'নিঃসঙ্গতার প্রকারভেদ দৃষ্টান্তসহ আলোচনা করো'।
এক বকলম তার কলমকে প্রায়শই বলে, 'মূর্খ
কোথাকার! কোথায় কী লিখতে হয় তাও জানো না?
কাউ মানে গরু হলে গাভীর ইংরেজি কী?'
কোথাকার! কোথায় কী লিখতে হয় তাও জানো না?
কাউ মানে গরু হলে গাভীর ইংরেজি কী?'
এক উন্মাদ আর এক উন্মাদকে শাসায়, 'কথা
কম
বলবা'।
বলবা'।
এক সজারু আরেক সজারুকে আচ্ছা এক গুতো দিয়ে
বলে, 'কাম অন, লাইফ ইজ নট আ বেড অব রোজেস'।
বলে, 'কাম অন, লাইফ ইজ নট আ বেড অব রোজেস'।
একটি ভ্যালেন্টাইন ডে সকাল-সকাল ঘুম থেকে উঠে
আরেকটি ভ্যালেন্টাইনকে বলল, 'আগে খালাতো
বোনের সাথে দেখা করে আসি'।
আরেকটি ভ্যালেন্টাইনকে বলল, 'আগে খালাতো
বোনের সাথে দেখা করে আসি'।
এক সপুষ্পক উদ্ভিদ আরেক সপুষ্পক উদ্ভিদকে গাঁধা
-ঘোড়া দেখায়, 'সন্দেহ করিও না, ফল পাইবে'।
-ঘোড়া দেখায়, 'সন্দেহ করিও না, ফল পাইবে'।
একটি আপেল আরেকটি আপেলকে সত্যি-সত্যি
খেয়ে ফেলতে চায়।
খেয়ে ফেলতে চায়।
একটি পুস্তক আরেকটি পুস্তককে ভয় দেখায়।
একটি রাতের ভেতর ঢুকে পড়ে অজস্র অন্ধকার আর
অনেক তারাভরা রাত।
অনেক তারাভরা রাত।
জিরাফ তার জলের সামনে নতজানু হয়।
একটি আঙুরগাছ সূর্যাস্ত দেখতে-দেখতে মৃত্যুর কোলে ঢলে
পড়ে।
একটি সকাল বিকশিত জবাফুল, নিদারুণ লাল।
This comment has been removed by the author.
ReplyDelete