।। বাক্‌ ১২২ ।। হাসিবুল আলম ।।






একগুচ্ছ কবিতা : হাসিবুল আলম





চলে যাবার আগে

জীবন
এমন একটা মিথ্যে বলো-
যা শুনলে
আরো কিছুদিন
থেকে যেতে ইচ্ছে করবে।



জার্নি

একটা রুম। একটা খাট। একটা বালিশ।
একটা পানির বোতল।
একটা চেয়ার। একটা টেবিল। কয়েক'শো বই।
কয়েকটা মাকড়শা।
একটা সিলিং ফ্যান। একটা টেবিল ল্যাম্প।
একটা নম্র অ্যাশট্রে। কিছু আলো। কিছু বাতাস।
একটা জানালা। মধ্যে আমি। বাইরে আকাশ।
মেঘ মাস। বর্ষা মাস। শীত মাস। চৈত্র মাস।
আর থাকে টিকটিকি। দু তিনটি।
আমার আগে রুমটায় কারা ছিল-জানি না।
আমার পরে রুমটার কি হবে- জানি না।



মানুষ বিতান


হাস্যকর মানুষ এক- দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে
মানুষ দেখি।
অনেক কমলা রঙের মানুষ ছিল
অনেক চোখ 'বড় বড়' মাছরাঙা মানুষ
ভুল করা মায়ামৃগ মানুষ ছিল অনেক
মনমরা বৃক্ষ বৃক্ষ মানুষ
ব্যথা পাওয়া মানুষ। ব্যথা দেওয়া মানুষ।
পাঁচ ফুট তিন ইঞ্চির হাস্যজ্জ্বল মানুষ ছিল।
মনের মধ্যে পরম আহ্লাদে এক খণ্ড পাথর
পুষে বড় করবার দায়িত্বে থাকা মানুষ আমি।
ডেকে ডেকে মানুষ দেখি- হাস্যকর এক
মানুষ।

রঙ হারানো। হাত হারানো মানুষ আমি।
তবু স্বপ্নে আমি মানুষই দেখি। পরমানন্দে
ডাক দেই- 'মানুষ' 'মানুষ' বলে!


হতাশার বাচ্চারা

এইসব হতাশা নিয়ে
এইসব বাতাসা নিয়ে
এইসব সুন্দর সুন্দর স্মৃতি নিয়ে
এইসব মারা খাওয়া স্মৃতি নিয়ে
এইসব শুয়োরেরা সব
এইসব গাধারা সব
এইসব গিরগিটিরা সব
সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে
হাত-মুখ ধুয়ে
নিজেদেরকে মানুষ ভাবতে ভাবতে
এক একদিন টুপ করে মরে যাবে
এক একটা..
এইসব হতাশার বাচ্চারা।



মানুষদের 'না' বলুন

ওরা মরুক। ওরা মারুক।
ওদের ইঁদুরে পাক।
ওদের আনন্দ মাখা ভাত
কাকে খাক।
ওদের দুঃখগুলো গোল্লায়
যাক।
ওদের ধর্মে পাক।
কোরান-বেদ-পর্নে খাক।
ওরা সব ওরাংওটাং হয়ে বেঁচে থাক।
বিনাটিকেটে বাসে। ঝুলে ঝুলে।
একদিন
মানুষেরা সব জাহান্নামে যাক।


আমাদের কথা

আমি কোন্ এক বালের জীবনের জন্য অপেক্ষা
করে আছি
তুমি কোন্ এক বালের জীবনের জন্য অপেক্ষা
করে আছো
জানি না-
হাজার হাজার ছলচাতুরী দিনরাত্রি পার করে শেষমেশ
কোন্ কোন্ বালের ঘোড়ারডিম
তুমি পাবে এই জীবন থেকে?
তবু
এই পৃথিবীতে
তুমি কোন্ এক বালের সফলতার জন্য আমাকে
ছেড়ে গেলে
আমি কোন্ এক বালের দুঃখের জন্য তোমাকে
মনে রাখলাম!
ঠিক যেভাবে-
হাজার হাজার বিষাদ বছরের পরেও আমরা পরস্পর
পরস্পরকে ছেড়ে না যাওয়ার জন্য কথা দিয়েছিলাম...











No comments:

Post a Comment