-‘বাবা, একটু শুনবে!’
বাজার ভর্তি ব্যাগ সাইকেলের হ্যান্ডেলে ঝুলিয়ে কমল বাড়ি ফিরছিল। ভরা ব্যাগ থেকে
পুঁই ডাঁটার একটা অংশ আকাশের দিকে উচু হয়ে আছে।
কমল প্রথমে না শোনার ভান করছিল। তারপর কী মনে করে থেমে রাস্তার পাশে কুঁজো দাঁড়িয়ে
থাকা প্রায় বছর সত্তরের এক বৃদ্ধের দিকে এগিয়ে গেল। তাঁর পরনে সবুজ চেক লুঙ্গি আর হাফ হাতা সাদা স্যান্ডো
গেঞ্জি।
-‘আমাকে ডাকছেন?’
-‘হ্যাঁ দাদু ভাই।‘ বৃদ্ধটি সম্বোধন পালটালেন।
-‘বলুন!’
-‘আমাকে তুমি দশটা টাকা দিতে পারবে?’
হঠাত্ এভাবে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে কেউ টাকা চাইতে পারে কমল ভাবতে
পারেনি। বলল- ‘দেব। তা টাকা দিয়ে কী করবেন?’
বৃদ্ধটি মৃদু হেসে জবাব দিলেন-‘মানুষ টাকা দিয়ে কী করে?’
এতোটা ভাবেনি কমল। -‘মানে, বলতে চাইছি কী কিনবেন?’
-‘চাল কিনব বাবা।‘ স্মার্ট ভঙ্গিতে
উত্তর বৃদ্ধের। কিন্তু আবার সম্বোধন পাল্টালেন। তারপর আরো যোগ করেন।
-‘সকাল থেকে এখানে দাঁড়িয়ে ভিক্ষা করছি... এখনো এক কেজি চাল কেনার টাকা জোগার
হয়নি। এক-দুই টাকার বেশি কেউ দেয়না।‘
বৃদ্ধের বলার ভঙ্গির মধ্যে মার্জিত ভাব আছে। ঠিক
ভিখারিদের মত নয়।
কমল মানি ব্যাগ খোলে। নীলচে একতাড়া একশ টাকার নোট। কড়কড়ে নোটে গান্ধিজি হাসছেন।
কিন্তু টাকা তো খুচরো নেই!
-‘আমার কাছে তো খুচরো নেই! সব একশ টাকার নোট। কী করি বলুন তো?’
-‘আমার কাছে আছে। দাও!’ হাত পেতে নোটটা নিয়ে জানতে চাইলেন-‘তোমাকে কত ফেরত দেবো?’
-‘পঞ্চাশ টাকা।‘ রীতিমত অবাক হয়ে কমল দেখছে বিষয়টা।
বৃদ্ধ পিছন ফিরে ধুতির খুঁট থেকে পাঁচটা দশ টাকা গুণে তারপর কমলের দিকে ফেরেন।
-‘এই নাও!’
-‘আপনি কোথায় থাকেন? বাড়িতে আর কে কে আছে?’
এবার আর বৃদ্ধ কোন উত্তর দেন না। দ্বিতীয় বার প্রশ্ন
করেও একি অবস্থা। বৃদ্ধের ভাবটা এমন, কাজ ফুরিয়েছে। এবার তুমি কেটে পড়ো।
ফুরফুরে মেজাজে কমল সাইকেল চালাচ্ছে। গীতার এক জায়গায়
কৃষ্ণ বলেন- দান করলে গ্রহীতার চেয়ে দাতার লাভ হয় বেশি। কমল মনেহয় কথাটার তাৎপর্য এখন
হৃদয় দিয়ে অনুভব করছে।
* * * * * * * * * * * * * * *
১২ই জানুয়ারি। যুব দিবস। ইতিহাসের শিক্ষক কমলের
প্রারম্ভিক ভাষণ আছে স্কুলে। ট্রেনে যেতে যেতে কমল ভাষণের পয়েন্টগুলো ঝালিয়ে নেয়। কল্যাণী
লোকাল বলে জানলার পাশে জায়গা পেয়েছে। চলমান সবুজ পিছনে ফেলে দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে
ট্রেন। মায়া জড়ানো এই সব দৃশ্য। সতেজ বাতাসে বুকটা ভরে ওঠে কমলের।
ব্যারাকপুর নেমে অটো। কমল জায়গা পেয়েছিল চালকের বাঁ দিকে। কিছুক্ষণ পর দেখল
চালক সরতে সরতে ডান দিকের কোনায় চলে গেছে। আর তার নাতিদীর্ঘ কালো লোমশ বাম হাত প্রাণ
পণে স্টিয়ারিং আগলে রাখতে চেষ্টা করছে। কমলের মনে হল অটোটা ও নিজেই চালাচ্ছে। স্টিয়ারিং
শুধু অন্যের হাতে।
-‘ও মাই গড! এ কী করেছেন?’ অংকের
টিচার পলা মিত্র আঁতকে ওঠার ছদ্ম ভঙ্গি করল।
-‘কী করলাম আবার?’
-‘নীল জিন্স গেরুয়া পাঞ্জাবি! তাহলে গানটা গেয়েই ফেলুন ‘রঙ দে...!’ বলেই অদ্ভুত
হাসল পলা।
হাসির সাথে ঝরণার তুলনা কে প্রথম দিয়েছিল জানা নেই। কিন্তু এখন পারফেক্ট মনেহচ্ছে
কমলের। বিশেষ করে নিচের পাটিতে পলার ইনবিল্ট গজ দাঁতটা।
-‘আপনিও তো রাজকুমারী সেজে এসেছেন!’
-‘উঁহু যুবরানী’
-‘এবং... ওড়নার সাথে আপনার রাজকীয় শত্রুতা। বড় মিষ্টি... এবং রিয়াস...’
দুটো ক্লাস রুমের মাঝে আড়াল মত একটা জায়গায় দাঁড়িয়ে দুটো উজ্জ্বল মানুষ। উভয়ের
পোশাকের উজ্জ্বলতা রোদের সঙ্গে মিশে দূর থেকে দেখতে একজন বলে মনে হচ্ছিল। কোন দুর্ঘটনার আগেই
পলার সম্বিৎ ফেরে।
-‘এসব কী হচ্ছে কমল স্যার? ডাকব স্টুডেন্টদের?’ ছদ্ম রাগ
চোখে মুখে।
ততক্ষণে মাইকে অনুরোধ করা হচ্ছে সবাইকে নির্দিষ্ট আসনে গিয়ে বসতে। পলা ও কমল
মঞ্চের বাঁ দিকে পাশাপাশি বসল।
-‘সত্যি আমাদের দুর্ভাগ্য স্বামীজির মত মহতী প্রতিভা আমাদের দেশে দ্বিতীয়টি
আসেনি। উনি এক এবং অদ্বিতীয়। আমি তো ওনাকে বলি বিপ্লবী
সন্ন্যাসী। সেই বিশ্ব তোলপাড় করা বাণী-‘জীবে প্রেম
করে যেই জন সেই জন সেবিছে ঈশ্বর...।‘
-‘আর কতক্ষণ? এবার আমি আমার ভাষণটা ভুলে যাব।‘ অস্থির ভাবে কমল বলে পলাকে।
-‘ভুলে যাবেন না। উনি এই স্কুলের সম্পাদক।‘
-‘ঠিক আছে। কিন্তু আমার ভাষণটার কী হবে! কত খেটে তৈরি করলাম... আবার নাকি সাংস্কৃতিক
অনুষ্ঠান আছে!’
-‘ছাড়ুন তো! ভাষণ দিয়ে ছাই হয়।‘
-‘উঁহু! আগুনও হয়। প্রমাণ আছে।‘
এর মধ্যে ছোট-খাটো আকারের ভুঁড়ি নিয়ে প্রদীপবাবু হন্তদন্ত হয়ে কমলের কাছে এসে কাকুতি মিনতি করতে শুরু করেন।
-‘কমলবাবু! একটা কথা বলব, মাইন্ড করবেন না তো?’
-‘না না। বলুন!’
-‘আপনার বক্তৃতাটি কমিটি বাতিল করেছে। দেখতেই তো পাচ্ছেন। এক ঘন্টা হয়ে গেল। সম্পাদক মাইক ছাড়ছেন না ।‘
-‘আপনার কী মত?’
-‘আমি কে বলুন তো, স্কুলের? হেড স্যার হলেও আমার হাত পা বাঁধা। ভেরি সরি কমলবাবু!
প্লিজ ডোন্ট মাইন্ড!’
-‘ইটস ওকে। তাহলে আর কী! আমি কী এখন বাড়ি যেতে পারি?’
-‘তা কী করে হয়! কমিটির সিদ্ধান্ত অনুষ্ঠান শেষ না হওয়া পর্যন্ত সব টিচারকে
স্কুলে উপস্থিত থাকতে হবে। থাকুন না, খারাপ লাগবেনা হয়ত! বাইরের শিল্পিরা আসছে।‘
-‘কী কী গান গাওয়া হবে ঠিক করা আছে তো?’
-‘হ্যাঁ হ্যাঁ। ও নিয়ে আপনি চিন্তা করবেন না। সব ঠিক করা আছে’।
-‘ওকে। থাকছি’।
প্রায় ঘন্টা খানেক পর সম্পাদক মাইক্রোফোন ছাড়লেন। ‘সব ঠিক
আছে’টা টের পাওয়া গেল তৃতীয় গানটা শুরু হবার পর। কমল হেড স্যারের ঘরে প্রবেশ করল ঝড়ের
মত।
-‘স্যার, আপনি কিছু বলবেন না?’
-‘কী আর বলব! জানেন তো সবি!’
-‘আপনি স্কুলের প্রধান। পাওয়ার আছে আপনার কাছে। বন্ধ করুন এসব!’
-‘আচ্ছা, কমলবাবু!
আপনি কী দেখতে পাচ্ছেন না, সম্পাদক স্বয়ং সামনের চেয়ারে বসে? উনিও তো কিছু বলতে পারেন।
কিন্তু বলছেন না।‘
-‘তার মানে আপনি কিছু বলবেন না?’
-‘আমি নিরুপায় কমলবাবু! ছমাস আছে রিটায়ারের। আমি আর কোন ঝামেলায়
জড়াতে চাইনা।‘
-‘ওকে। আমিই
দেখছি।‘ বলে কমল দরজাটা একটু জোরে ধাক্কা দিয়েই যেন বেরিয়ে গেল। দরজার পর্দাটা এমন
ভাবে উড়ছে যেন কমলের সাথে সাথেই যেতে চাইছে।
কিছুই দেখা
বা শোনা হল না কমলের। পলার তীব্র আপত্তিতে শেষ পর্যন্ত রণে ভঙ্গ দিতে হল। অটো না নিয়েই ওরা হেঁটে রওনা দিল। ততক্ষণে অনুষ্ঠান
মঞ্চ ডিস্কো থেকের আকার নিয়েছে। বাতাসে আন্দোলন সৃষ্টি করে উচ্চস্বরে মাইক শোনাচ্ছে-‘লুংগি
ড্যান্স, লুংগি ড্যান্স,লুংগি ড্যান্স...’
কমল ভাবল সকালে পঞ্চাশ টাকা দিয়ে ও যে আনন্দটুকু কিনেছিল
তার ভ্যালিডিটি চব্বিশ ঘন্টাও থাকল না। একশ টাকা দিয়ে দিলেই ভালো হত।
* * * * * * * * * * * * * * *
-‘কমলবাবু! এই স্কুলে পড়াতে আপনার লজ্জা হয়?’
-‘নাতো!’
-‘তাহলে আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে এসব কে লিখেছে?’
-‘আসলে ...’
-‘আসলে মানে? স্কুলের মান সম্মান তো ধুলায় মিশিয়েছেন!’
-‘যুব দিবসে লুঙ্গি ড্যান্স কি সম্মান বর্ধক?’
-‘এই, তুই একবার বাইরে আয়! তোর কী কী বর্ধন করি দ্যাখ্?’
মিটিং ঘরের বাইরে জমে থাকা ভিড় থেকে একজন বলে উঠল। এমন কি দুটো জানলায় ভর্তি
রাশি রাশি চোখ । চাপা ভয় ক্রমশ চেপে
ধরতে থাকে কমলকে।
সম্পাদক আবার বলেন।
-‘লুংগি ড্যান্সের
মধ্যে অন্যায়টা কী দেখলেন? লুঙ্গি একটি সম্প্রদায়ের প্রধান পোশাক। একটি দেশের জাতীয়
পোশাক। ওড়না উঠিয়ে নাচতে পারলে লুঙ্গি কী দোষ করল?’
-‘প্রদীপবাবু আপনি কিছু বলুন?’ হেডস্যারের দিকে তাকিয়ে মরিয়া ভাবে অনুরোধ
করে কমল।
-‘আমার কিছু বলার নেই।‘
সম্পাদক আবার শুরু
করলেন। আজ মনেহয় ওনাকে কথা রোগে পেয়েছে।
-‘শুনুন কমলবাবু!
বছর খানেক হল আপনি এই স্কুলে এসেছেন। এরই মধ্যে আপনার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ। ক্লাশ
ফেলে রেখে আপনি অন্য টিচারের সঙ্গে গল্প গুজবে মত্ত থাকেন। সব খবর আছে আমার কাছে।‘
কমল বাধা দিতে যায় একথার। কিন্তু দুই জানলা ভর্তি
অক্ষিপুঞ্জের দিকে তাকিয়ে দমে যায়। জানলা দুটো যেন বিশাল দুটো চোখের মতো তাকিয়ে আছে
কমলের দিকে।
-‘আপনি কি জানেন, স্বয়ং প্রফুল্লচন্দ্র একবার এই স্কুলে এসেছিলেন?
এবং ভূয়সী প্রশংসা করে গেছেন?’
এই বলে সম্পাদক দেয়ালের এক কোনে পাথরে খোদাই করা
নোনা ধরা প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন দেখাতে চাইলেন। পানের গাঢ় পিক পর্যন্ত ঢাকতে পারছে
না অসংখ্য M+A, B+N, U+P ইত্যাদি।
-‘হুম্!’
-‘হুম্ মানে!’
-‘হ্যাঁ। জানি’।
-‘তা সব জেনে শুনে
আপনি স্কুলের সম্মান নষ্ট করলেন কেন?’
- ...
-‘চুপ করে থাকবেন
না! আপনি যখন নেটে কোন সাইট খোলেন, দেখতে পান না অজস্র নগ্ন শরীরের বিজ্ঞাপন? বোঝেন না কীভাবে প্রস্টিটিউসনকে লিগাল করার অপচেষ্টা
চলছে? কোন প্রতিবাদী পোস্ট করেছেন এই বিষয়ে?’
পাশ থেকে একজন বলে ওঠে –‘ওতেই তো এনাদের এন্টারটেইন হয়!’
সম্পাদক থামেন না।
-‘সারা পৃথিবীর
মানুষের কাছে আপনি এই স্কুলের নাম হেয় করেছেন।... ঠিক আছে। উপর মহলকে জানাচ্ছি। তারাই
এর বিচার করবে। আমাদের কিছু করার নেই। আপনি এখন আসুন!’
অভিভাবক প্রতিনিধি সমীরবাবু বলে ওঠেন-‘ না স্যার,
এতো সহজে ছাড়া যায় না।‘
সঙ্গে সঙ্গে বাইরের ভিড় সমস্বরে চিৎকার করে ওঠে-‘না
না। এতো অল্পে ছাড়া যায় না। একে আমরা স্কুলে ঢুকতে দেব না।‘
ছদ্ম অসহায় ভঙ্গিতে এবার সম্পাদক জানান –‘না কমলবাবু!
জনগণের বিরুদ্ধে আমি যেতে পারব না। একটা কাজ করুন- আগামী একমাস আপনি স্কুলে আসা বন্ধ
রাখুন। উপর মহল কী বলে দেখি, তারপর অন্য ব্যবস্থা।‘
কোনঠাসা অবস্থা কমলের। দেয়ালে টাঙানো রাগী বিবেকানন্দের ছবিটা যেন কুঁকড়ে মুকড়ে যাচ্ছে... ভেঙ্গে যাচ্ছে। পলার চোখে জল।
* * * * * * * * * * * * * * *
প্রায় মাস খানেক পর মুচলেকা নামে এক প্রকার কঠিন
আবেদন পত্র লিখে কমল পাঁচটা কপি করল। বলা ভালো করতে বাধ্য হল। এবং নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের
কাছে পৌঁছনোর যাবতীয় ব্যবস্থাও হল। তারপর বিবিধ সতর্ক আর সাবধান বাণী হজম করে স্কুলে
ঢোকার মহার্ঘ্য অনুমতিটা অর্জন করল।
নির্দিষ্ট
দিনে কমলকে দেখা দেখা যায় স্কুলের গেটে। অটো থেকে নামল। গেট পেরোনের পর থেকে ছাত্র
ছাত্রীরা কেমন যেন অবাক দৃষ্টিতে ওদের প্রিয় কমল স্যারের দিকে তাকিয়ে আছে। মিড ডে মিল
রুম থেকে রান্নার মাসি তো হেসেই অস্থির। কিন্তু টিচারদের চোখ ঊর্ধ্বমুখী। তাদের চোখ
যেন চড়ক গাছের সঙ্গে মিতালি তৈরি করতে উদগ্রীব।
এটেন্ডেন্স খাতায় সই করার সঙ্গে সঙ্গে হেড স্যার
ডেকে পাঠালেন।
-‘কমলুবাবু! এ
আপনি কী করেছেন?’
-‘কী করেছি স্যার?’
-‘আপনি বুঝতে পারছেন না?’
একটু ভেবে কমল বলে-‘ও!’ তারপর জানলার দিকে কয়েক মুহূর্ত
তাকিয়ে থেকে জানতে চায়- ‘শুনুন! এই বিষয়ে এই স্কুলে কি কোন নির্দেশিকা আছে? থাকলে দেখান!’
জানলার বাইরে তখন একটা উঁচু গাছ রোদের নিচে একা
দাঁড়িয়ে আছে।
-‘ওফ্! আপনি আবার
আমাদের বিপদে ফেলবেন!’
দুই হাত মাথায় রেখে বসে পড়েন হেডস্যার।
ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিই এবার দারুণ গরম। ফ্যানের
তীব্র হাওয়ার সাথে পাল্লা দিয়ে উড়ছে কমলের গেরুয়া পাঞ্জাবি আর সবুজ চেক লুঙ্গি।
# # #
দুর্দান্ত রিপন। অনেককিছুই চোখে আঙুল দিয়ে দেখালে।
ReplyDelete