।। বাক্‌ - ১২২ ।। রঞ্জিত সিংহ ।।




রঞ্জিত সিংহের দুটি কবিতা


দৈত্যফুল

উপেক্ষিত অবর্ণ পাথরখন্ড হা হা মরুভূমি কাঁটাগাছে
ভঙ্গ, বাঁকা পড়ে আছি একইভাবে...কতদিন...
বালির ওপরে ও নিচে আধাআধি।
দিনমানে যখন একটা অঙ্গার কঙ্কাল মাথা তুলতে তুলতে,
দু পা যোজন যোজন ফাঁক – অন্তরীক্ষ, সমস্ত মরু কামড়ে
ধরি, উড়ন্ত শকুন ঝলসে পোড়া বালি, উট ও মানুষ
যুগপৎ লাশ।

না, আমি তারা নই, মহামায়া নই, মহাবিদ্যারও কেউ নই,
বেদেরও দেবতা নই,
আমার ভেতরে অসংখ্য মাংসাশী ফুল জ্বলজ্বল-
আমি ভঙ্গ দেবতা :
ভাঙা সূর্যাস্তের রাঙা চাকা চাপা পড়ে হা হা  বালির ওপরে ও নিচে
আধাআধি।

দেবদেবী উপহাসে ফুঁৎকার দেয়, জনমনুষ্যেরা উপেক্ষায়
থুৎকার করে।
আমি ফণী, ফণিমনসার কাঁটা গা সূর্যাস্ত ফুল,
ওত পেতে বসে আছি।
পাপড়ি মেলে মানুষ, পতঙ্গ,কীট, পশু, পাখি,
এমন কি দেবতাকেও জাদুবলে আমার গর্ভে টেনে এনে
ঝম্‌ করে পাপড়ির সমস্ত কপাট বন্ধ করে দিই।

উপেক্ষায় কেউ বা অনিল হয়, কেউ ঝিঁঝিট ঝল্লরী।
আমি? মাংসভুক দৈত্যফুল-
শূন্য মরুভূমি মায়া করে জেগে আছি...



আত্মজীবনীমূলক

আমার ভেতর কী দেখতে পেলে
যেন, ঠাণ্ডা হলেই বরফ, জ্বলে উঠলে জল!
না, সে লোক আমি নি,ভক্তিমার্গ কোনটাই না।
আসলে লোককে যখন জোঁকে ধরে,
জলের তলায় থেকে পা না তুললে
বুঝতেই পারে না- যন্ত্রণা কতটা!

আমি সেই জলের তলায় জোঁকে ধরা দুটো পা।




No comments:

Post a Comment